শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৯ অপরাহ্ন
°৫ তারিখের পর বাস মালিক সমিতির অবৈধ আহবায়ক হয়েছেন
°বিএনপির ভুয়া সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে নিতে চান বিআরটিসির বাস বরাদ্দ
°সাগরদী অঞ্চলে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করছেন তিনি
নিজস্ব প্রতিবেদক : দল ক্ষমতায় না এলেও বরিশালে অঘোষিত পরিবহন সেক্টর এ মাফিয়া হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। গত ৫ আগষ্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জিয়া নিজের বরিশাল বিএনপির সদস্য সচিব তকমা গায়ে লাগিয়ে আলাদীনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন।বরিশাল পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতি দখলে নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকদের নিয়ে গঠন করেন একটি অবৈধ আহবায়ক কমিটি। এই কমিটির লোকজন বিগত দিনেও অর্থাৎ আওয়ামী সরকার ক্ষমতামলে চুষে খেয়েছে মিনিবাস মালিক সমিতির। তাদের নিয়ে গঠন করেন আহবায়ক কমিটি। সম্প্রতি জিয়ার গঠন করা আহবায়ক কমিটির লোকদের পরিচয় নিয়ে এবং কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়ে সর্বমহলে।এখানে দেখা যায় কমিটির ১ নং সদস্য এইচ এম মান্নান বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিল। তিনি নিজে সড়ক বিভাগ কতৃক বৈধ কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি।তিনি বিগত ৮ আগষ্ট সমিতির কার্যালয়ে গুটিকয়েক বাসমালিক সমিতির সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করে নগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার কে আহবায়ক করে ও নিজে ১ নং সদস্য হয়।একই সাথে কমিটির সদস্য করা হয় সাবেক বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা নাসির মৃধা(পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়) কমিটির ৩ নং সদস্য মোশাররফ হোসেন সান্টু জিয়ার চাচা শশুর ও বিগত সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেনের বড় ভাই। কাওছার হোসেন শিপন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও সাদিক আবদুল্লাহর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত। কমিটির ৪ নং সদস্য আল আমিন আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা ও বিগত আন্দোলনে বিএনপির কর্মীদের নিপীড়নকারী হিসেবে নগরীতে পরিচিত। এই কমিটি গঠন করার পরে রাজধানী ঢাকায় জিয়ার সাথে বৈঠক হয় ২৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের নেতা হুমায়ুন কবিরের সাথে।এই হুমায়ন কবির মালিক সমিতির সভাপতি ছিলেন। সেখানে ভাগাভাগির হালুয়া রুটির বন্টন করা হয়। ঢাকার একটি ক্লাবে হয় সেই বৈঠক। সেখানেও মধ্যস্থতাকারী ছিল এই মান্নান। তবে এখনো আহবায়ক কমিটি সরকারিভাবে অনুমোদন করতে পারে নি জিয়াউদ্দীন সিকদার।
বিএনপির সাধারন সম্পাদক পরিচয়ে বাস বরাদ্দ দাবী:
গত ২৮ আগষ্ট বিআরটিসির চেয়ারম্যান বরাবর একটি পত্র দাখিল করেন জিয়া উদ্দিন সিকদার। সেখানে নিজেকে বরিশাল মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেন তিনি। অথচ বরিশালে আহবায়ক কমিটি বিদ্যমান।ঐ পত্রে তিনি ঢাকা বরিশাল রুটে নিয়মিতভাবে পরিচালনার জন্য এসি বাস বরাদ্দ চান।
রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বাস ব্যাবসা পরিচালনা করতে চাওয়া জিয়া এখনো বহাল তবিয়তেই আছেন বিএনপিতে।
সারাদেশে বিএনপির এত কড়াকড়ি আরোপের মধ্যে জিয়ার খুটির জোর কোথায়? অনুসন্ধানী সুত্র বলছে মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুককে ম্যানেজ করে এহেন সংগঠন পরিপন্থী কাজ করে জিয়াউদ্দিন সিকদার।
আওয়ামী প্রীতির আরও নিদর্শন :
বরিশাল মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয় বিএনপি অফিস পোড়ানোর।সেই মামলা থেকে অজ্ঞাত কারনে বাদ পড়ে যায় মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীরা।এর প্রধান কারন ছিল জিয়া উদ্দিন সিকদার। পরে জনশ্রুতি হয় এদের মধ্যে যে সকল মহিলা কাউন্সিলর রয়েছে তাদের নিকট থেকে আর্থিক লাভবান হয়েছেন তিনি। এছাড়াও বেশকিছু আওয়ামী লীগের রাজনীতিক নেতা ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের থেকেও নিয়েছেন আর্থিক সুবিধা।
এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন,তিনি(জিয়া সিকদার) বাস মালিক সমিতির আহবায়ক হয়েছেন সেটা আমি জানি কিন্তু বিএনপির সাধারন সম্পাদক পরিচয়ে বাস বরাদ্দ চান সেটা জানতাম না।যদি এটা করে থাকে তাহলে অন্যায় করেছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক রওনাকুল ইসলাম টিপু বলেন,কোন অভিযোগ থাকলে কেন্দ্রীয় সেলে লিখিত পাঠালে অবশ্যই যাচাই বাছাই করে দল ব্যবস্থা নেবে।কারও ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়ভার বিএনপি নেবে না।সেটা ৫ তারিখের পর নিশ্চয়ই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।
Leave a Reply